রবিবার, ৫ মে, ২০১৩

হেফাজতকে ঢাকা ত্যাগে যা প্রয়োজন সরকার করবে : সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম

ঢাকা: হেফাজতকে ঢাকা থেকে সরে যাওয়ার জন্য যা যা করার প্রয়োজন, সরকার তার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। রোববার বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন।
শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচী পালন করে ঢাকা ত্যাগ করার আহবান জানিয়ে আশরাফ বলেন, “সন্ধ্যার মধ্যে হেফাজতের নেতাকর্মীদের ঢাকা ত্যাগ করার কথা বলা হয়েছে। না হলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সরকার যা যা করার দরকার তার সবই করবে।” তবে রাতভর মতিঝিলে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন হেফাজতের নেতারা। প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “হেফাজত রাজাকার-আলবদরের পরবর্তী প্রজন্ম ও পাকিস্তানের প্রেতাত্মা। ধর্মের নামে তারা তুলকালাম কাণ্ড ঘটিয়ে চলছে। আগামীতে তা আর বরদাশত করা হবে না। অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে হেফাজত এবার ঢাকায় এসেছে। আগামীতে ঢাকায় আসতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে ঘর থেকে হেফাজতের নেতাকর্মীদের বের হতে দেওয়া হবে না। রাজাকার-আলবদরের নতুন প্রজন্ম হেফাজত কখনোই রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে আসতে পারবে না। তাদের রক্তচক্ষুকে আওয়ামী লীগ ও এদেশের জনগণ ভয় পায় না। মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকারের উদারতাকে দুর্বলতা ভাববেন না,” যোগ করেন তিনি।

কমিউনিস্ট পার্টির কার্যালয়সহ রাজধানীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে হেফাজতের নেতাকর্মীরা হামলা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, পল্টনসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে হামলা অগ্নিসংযোগ, বাস ভাঙচুর করে তারা ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার যা যা করার প্রয়োজন সবকিছুই করতে প্রস্তুত। জামায়াত-বিএনপি-হেফাজত একই ধারা। তারা একই রকম ভাঙচুর, আগুন ধরানোর ঘটনা ঘটায়। তাদের মধ্যে কোনো বেশ-কম নেই। এদের সবার ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ একই রকম।”

আশরাফ বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ বক্তৃতা দিয়েছেন হেফাজতের নেতারা। কথাবার্তা সংযত করুন। সরকারও দুর্বল নয়, আওয়ামী  লীগও দুর্বল নয়। ধৈয্য ধারণকে দুর্বলতা হিসেবে নেবেন না। সংঘাতের পথে আসলে আওয়ামী লীগ একাই হেফাজতকে দমন করতে যথেষ্ট।” বিএনপির প্রতি আবারো আলোচনার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আসুন, আলোচনা করে ঐক্যমতের ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিই।” সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আশরাফ আরো বলেন, “আবারো ওয়ান ইলেভেনের কোনো সম্ভাবনা নেই। ইতিহাস বার বার পুনরাবৃত্তি হয় না। নতুন কিছু হতে পারে।”

এ সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভপতিমণ্ডলির সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, খাদ্যমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, আহমদ হোসেন, বাহাউদ্দিন নাছিম, হাবিবুর রহমান সিরাজ, আব্দুল মান্নান, হাবিবুর রহমান খান, ডা. বদিউজ্জামান ভুঁইয়া ডাবলু, অসিম কুমার উকিল, মৃণাল কান্তি দাস প্রমুখ।