মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০১৩

রোববার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে হেফাজত

হাটহাজারী থেকে: ঢাকায় ব্যাপক সহিংসতার পর আগামী রোববার (১২ মে) সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে হেফাজত ইসলাম। একইসঙ্গে ১৮ দলীয় জোটের ডাকা বুধ ও বৃহস্পতিবারের সকাল-সন্ধ্যা হরতালেও সমর্থন দিয়েছে সংগঠনটি। মঙ্গলবার হাটহাজারীর দারুল উলুম মইনুল ইসলাম মাদ্রাসায় হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়েছে। হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক আশরাফ আলী নিজামপুরী এ কর্মসূচীর ঘোষণা দেন।
এসময় মাদ্রাসার ভেতরে অবস্থান করলেও হেফাজতে ইসলামের আমির ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা শাহ আহমদ শফী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না। তবে সংবাদ সম্মেলন আহ্বানের পর হেফাজতের অন্যান্য নেতারা জানিয়েছিলেন, আহমদ শফী তাতে উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই সংবাদ সম্মেলনে আহমদ শফীসহ হেফাজতের তেমন কোনো শীর্ষ নেতারই উপস্থিতি ছিল না।

ঢাকায় হেফাজত কর্মীদের উপর হামলা হয়েছে দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আশরাফ আলী নিজামপুরী বলেন,‘ঢাকায় যে হামলা হয়েছে তার আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়ে আমাদের অবস্থান জানানোর সুযোগ দেয়নি সরকার। কেন্দ্রীয় নেতাদের ঢাকা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।‘ ঢাকা যে তাণ্ডবের ঘটনা ঘটেছে তাতে হেফাজতে ইসলামের কোন সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে তিনি বলেন, আমরা সমাবেশের জন্য বায়তুল মোকাররমের সামনে অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের শাপলা চত্ত্বরে সমাবেশে করার অনুমতি দিলো সরকার। দুপুর থেকেই আমাদের কর্মীরা সেখানে আসতে শুরু করে। বায়তুল মোকাররমে যে তাণ্ডব চালানো হয়েছে সেখানে হেফাজতে ইসলামের কোন সম্পৃক্ততা নেই।‘

তিনি বলেন, আমরা ১৩ দাবির বিষয়ে সরকারকে পরিস্কারভাবে আমাদের অবস্থান জানিয়েছি। কিন্তু সরকার আমাদের দাবির বিষয়ে কোন ধরণের আশ্বাস না দিয়ে কৌশলে প্রত্যাখ্যান করে। তাই আমরা ঘোষণা দিয়েই ঢাকা অবরোধ করি। ওইদিন রাতে অবস্থান নিলেও আমাদের ইচ্ছা ছিল সোমবার সকালে দোয়ার মাধ্যমে সমাবেশ শেষ করে ঘরে ফিরে যাব। আমাদের ইচ্ছার কথা আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু সমাবেশ শেষ করে ঘরে ফেরার সুযোগ সরকার আমাদের দেয়নি।

রোববারের পুরো ঘটনা সরকারের পূর্ব পরিকল্পিত অভিযোগ করে আশরাফ আলী নিজামপুরী বলেন,‘এ সরকার প্রমাণ করেছে তারা নাস্তিকদের সরকার। সাধারণ জনগণের নয়।‘নিজামপুরী বলেন,‘ আমরা পরিস্কার বলতে চাই, সরকার তার মনোভাব ও অবস্থান পরিবর্তন না করলে তাদের কী পরিণতি হবে আমরা জানি না। কারণ দেশের অধিকাংশ মানুষকে এভাবে দমন করে কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারে নি, এ সরকারও পারবে না। আলেম সমাজ রাজনীতি করে না। কাউকে ক্ষমতায় বসানো বা নামানোর জন্য আলেমদের আন্দোলন নয়,’ যোগ করেন তিনি।

সরকারের প্রতি হুশিয়ার উচ্চারণ করে তিনি বলেন,‘ আমরা সর্বশেষ সুযোগ দিয়ে বলতে চাই, আমাদেরকে হত্যা করে উল্টো মামলা দেয়ার চেষ্টা করছেন। এই পথ পরিহার করুন।‘ এসময় তিনি গ্রেফতার হওয়া হেফাজতের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীসহ অন্যান্য নেতাদের মুক্তির দাবি জানান।  সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা লোকমান হাকিম, কেন্দ্রীয় নেতা হাফেজ মোহাম্মদ তৈয়্যব,মাওলানা আবু তাহের,মাওলানা মাহমুদুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।